May 3, 2024, 9:32 am

তথ্য ও সংবাদ শিরোনামঃ
ভালুকায় মে দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত। ভালুকায় তীব্র তাপদাহে সর্বসাধারণের মাঝে পানি ও খাবার সেলাইন বিতরণ। আইবি বাংলো’র অর্থ আত্নসাতকারী সাইফুজ্জামান চুন্নু ধরাছোঁয়ার বাইরে বেনাপোলে বাস চাপায় নিহত ১ গুরুতর আহত ১। যশোরের অভয়নগর উপজেলায় ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের পিটুনিতে একজনের মৃত্যু। রাজশাহী মহানগরীর কুখ্যাত মাদক সম্রাট রাব্বি খাঁ আটক ভালুকায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার নিজকাটা খালে ভাসছে টর্পেডোর আকৃতির একটি বস্তু। জার্নালিস্ট ইউনিটি সোসাইটি (জেইউএস) এর প্রকাশিত “ত্রিমোহনা” সহ নিজের লিখা ও সম্পাদিত বেশকিছু ব‌ই মাননীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে উপহার দিলেন। ত্রিশালে ডাকাত দলের তিন সদস্য আটক। বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণসভা ওঅসচ্ছল পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তা বিতরণ। টংগিবাড়ী বাজারের পাশে ময়লার ভাগার ঝুঁকিতে পরিবেশ ও জনসাস্থ্য। টংগিবাড়ী উপজেলা প্রশাসন কতৃক তীব্র তাপদাহে সুপেয় পানির ব্যাবস্থা। বেনাপোল বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় ভারত থেকে আমদানিকৃত ৩৭০ টন আলু পচন ধরতে শুরু করেছে। ভালুকায় তীব্র তাপদাহে সর্বসাধারণের মাঝে পানি ও খাবার সেলাইন বিতরণ। ভালুকায় দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের আঘাতে বাবার মৃত্যু। তীব্র গরমে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে খাবার সেলাইন বিতরণ করলেন ওসি কামাল। ভালুকায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন স্মারক লিপি প্রদান। ঈদগািঁও উপজেলা নির্বাচনে তিনটি পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন ১৭ জন প্রার্থী। ময়মনসিংহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভালুকা মডেল থানা শ্রেষ্ঠত্ব। ভালুকায় ল্যান্ডমার্ক সিটি পার্টি সেন্টার উদ্বোধন। যশোরে ইরি (বোরো)ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কার্যক্রমে অপরাধজনক কোন ঘটনা ঘটেনি ময়মনসিংহ শিল্প এলাকায়। ছবি তোলার অপরাধে সাংবাদিক গ্রেফতার, অত:পর মুক্তি রংপুরের গঙ্গাচড়ায় অবৈধ ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় প্রতিবেশীর উপর হামলা আহত ৩ রমেকে ভর্তি। দেশব্যাপী তিন দিনের সতর্কতামূলক হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। ভাবির ছবি এডিট করে নগ্ন ভাবে প্রচার করায় আটক দেবর। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত থেকে ৪০ পিস স্বর্ণের বারসহ ২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিক ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা।

১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে পিরোজপুরে শহীদ এক অকুতোভয় নারী ভাগীরথী সাহাকে কেউ মনে রাখেনি।

১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে পিরোজপুরে শহীদ এক অকুতোভয় নারী ভাগীরথী সাহাকে কেউ মনে রাখেনি।

শহীদ ভাগীরথী সাহা, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ অকুতোভয় এক নারীর নাম। পিরোজপুর শহরের দুই কিলোমিটার সড়ক তাঁর রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তাঁকে মিলিটারি জিপের/মোটরসাইকেলের সঙ্গে বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় পিরোজপুর শহরের রাস্তায়। তারপর রক্তাক্ত ভাগীরথীকে গুলি করে হত্যা করে তাঁর মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয় বলেশ্বর নদীতে।

বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার দেবীপুর গ্রামে ভাগীরথীর জন্ম ১৯৪০ সালে। তাঁর বাবা মুড়ি বিক্রি করতেন। স্কুলে পড়ার সুযোগ হয় নি ভাগীরথীর। ১৯৫৬ সালে বিয়ে হয়েছিল পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের প্রিয়নাথ সাহার সঙ্গে। ১৯৬৭ সালে দুটি শিশু ছেলে রেখে স্বামী প্রিয়নাথ মারা যান।

৪ মে পিরোজপুরে পাকিস্তানি বাহিনী শত শত নিরীহ মানুষ হত্যা করে। জ্বালিয়ে দেয় ঘরবাড়ি। বাগমারা গ্রামের সাহাপাড়ায় ছিল ভাগীরথীর বাড়ি। তাঁর মালপত্রও সব লুট হয়ে যায়। দুই সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। শহরে এসে বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন ভাগীরথী। কোনো কোনো দিন ভিক্ষা না করে উপায় থাকত না। প্রতিদিন রাস্তায় মানুষের লাশ পড়ে থাকতে দেখতেন। ক্রোধ জাগে ভাগীরথীর। ভাবেন, শাস্তি দেবেন ওদের। রাস্তার ধারে দুই ছেলেকে শুইয়ে রেখে পিরোজপুরে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ঢুকে পড়তেন। ওখানের খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের দিতেন।

শহরে এসে ভাগীরথী পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পের আশপাশে ঘুরতে থাকেন। পাকিস্তানি বাহিনীর সুবেদার সেলিম তাঁকে ক্যাম্পের ভেতরে নিয়ে যায়। বলে, ‘বোলো মুক্তি কাঁহা, বহোত ইনাম মিলবে।’ ভাগীরথী মাঝেমধ্যেই পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে যান আর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে ভুলভাল তথ্য দিয়ে আসেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুত রেখে তিনি ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি সেনাদের বাগমারায় নিয়ে আসেন। ওই দিন মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনীর বেশ কিছু সৈন্য মারাত্মকভাবে আহত হয়। শহরে ফিরে যাওয়ার পথে খানাকুনিয়ারীতেও তারা গেরিলা আক্রমণের শিকার হয়। ভাগীরথী পাকিস্তানি বাহিনীকে বিপদে ফেলেছিল সেপ্টেম্বরের ৮ আর ৯ তারিখেও। ক্যাম্পে ফিরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন এজাজ নিশ্চিত হয়, ভাগীরথী মুক্তিযোদ্ধাদের চর। তাঁকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর ভাগীরথী আবার যান শহরে। বাজারের মধ্যে বসে থেকে পাকবাহিনীর চলাচল নজর করতে থাকেন। অল্প পরে পাকবাহিনীর দালাল শামসুল হক ফকির ও আশরাফ হোসেন তাঁকে দেখে ফেলে। ক্যাম্পে খবর পাঠায়। দুজন পাকিস্তানি হানাদার আর ছয়জন রাজাকার এসে হাজির হয়। ভাগীরথীকে ধরে নিয়ে ক্যাপ্টেন এজাজের সামনে হাজির করে। এজাজ সুবেদার সেলিমকে নির্দেশ দেয় ভাগীরথীকে হত্যা করার। এরপর দুজন সিপাহি রশি দিয়ে ভাগীরথীর দুই হাত বেঁধে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। রশির অপর প্রান্ত বেঁধে দেয় একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে। সাইকেল চললে ভাগীরথীর দেহ থেকে রক্ত-মাংস রাস্তায় খসে খসে পড়ে। সুবেদার সেলিম দুই কিলোমিটার মোটরসাইকেল চালিয়ে ভাগীরথীর নিথর দেহ বলেশ্বর নদে নিক্ষেপ করে।নদী থেকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা তার গ্রামের বাড়িতে সৎকার করে। এখনও তার সমাধির শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু পড়ে আছে বাড়ির এক নির্জন কোণায়।

পিরোজপুর শহরে স্থাপিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ভাগীরথীর নাম রয়েছে চতুর্থ স্থানে। আর শহরের কৃষ্ণচূড়া মোড়টিতে তার নামে রয়েছে একটি ফলক। ভাগীরথীর ঠাই হয়নি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়। একাত্তরের শহীদ ভাগীরথী সাহা বেঁচে আছেন শুধুমাত্র পিরোজপুর শহরের একটি নামফলকের মাঝে

দেশ স্বাধীনের দীর্ঘ সময় পরও রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে।

ভাগীরথীর ছোট ছেলে গণেশ সাহা (৬০) জানিয়েছেন, তার বয়স যখন ছয় মাস তখন বাবা পিরুনাথ সাহা মারা যান। এরপর তার মা ভাগীরথী সাহা তাদের দুই ভাইকে নিয়ে জীবন সংগ্রাম শুরু করেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে মাকে হারান গণেশ। তার বড় ভাই কার্তিক সাহা মারা গেছেন প্রায় ৭ বছর আগে।

গণেশের অভিযোগ, দেশ স্বাধীনের জন্য তার মা সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করলেও, তার মায়ের জন্য কিছুই করেনি রাষ্ট্র। এমনকি তার মায়ের স্মৃতিচিহ্নটুকুও সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। দারিদ্রের কারণে নিজ উদ্যোগে তিনি সেটি সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা করতে পারেননি।

গণেশের আরও অভিযোগ, তিনি বছরের পর বছর সংশ্লিষ্টদের কাছে ধর্ণা দিয়েছেন। তবে তাদের জন্য কোনো সহযোগিতার হাত বাড়াননি কেউ। এমনকি, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণও জানানো হয় না।

পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সমীর কুমার দাস বাচ্চু বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে যতগুলো নির্মম ঘটনা ঘটেছে তার একটি পিরোজপুরের ভাগীরথী সাহার ঘটনা।’

অসহায় শহীদ এ পরিবারটির প্রতি সরকারের দৃষ্টি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনিসহ স্হানীয়রা।

আমাদের প্রকাশিত তথ্য ও সংবাদ আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved: Duronto Sotter Sondhane (Dusos)

Design by Raytahost.com